আমরা বাঙ্গালিরা সাধারণতঃ ঘুমাতে যাবার আগে, রাত ১০ টা ১১ টার পর রাতের খাবার খেতে যাই। রাতের খাবার খেয়েই আমারা হাটা চলা না করে দেই ঘুম। কেউ কেউ আবার রাতের খাবার খেয়ে রাত জেগে জেগে টিভি, কম্পিউটারে কাজ করে। এতে কোন শারীরিক কাজ কর্ম কিন্তু হয় না। এটা যে কত খারপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গবেষনায় দেখা গেছে, রাতে দেরি করে খেলে হার্টের সমস্যা ও ওজনাধিক্য. ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দেয়।
বাইরের দেশগুলোতে কিন্তুু এর উল্টোটাই দেখা যায়। ওখানে রাতের খাবার ৭ টার মধ্যে খাওয়া হয়। অনেক দিনের আলো থাকতেই রাতের খাবার শেষ করে। তাইতো তারা এতো ফিট ও কর্মঠ।
রাতের খাবার কেন তাড়াতাড়িঃ-
১। ভরা পেটে খেয়েই শুয়ে পড়লে বা রাতের খাবার দেরি করে খেলে এর পরে আমাদের আর কোন শারীরিক কাজ হয় না। ফলে খাবারের ক্যালোরি আমাদের শরীরে ফ্যাট হিসাবে জমা হয়। খাবার গুলো ঠিক মতো হজম হয় না। ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
২। কিন্তু আপনি যদি ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘন্টা আগে খাবার খান তাহলে ঠিক মতো খাবার হজম হবে। কারণ আপনার কাজের মাধ্যমেই খাবার সঠিকভাবে হবে ঘমানোর আগেই। আর ভারি খাবার হজম হতে কমপক্ষে তিন ঘন্টা লাগে।
৩। মনে হতে পারে যে রাতে ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে খাবার খেলে রাতে ক্ষুদা পেতে পারে। কিন্তু তা নয় একটু ক্ষুদা ভাব আপনার শরীরকে ক্ষুদা ভাব আপনার শরীরকে ফ্যাট ক্ষয় করার প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাবে, শরীরের সঞ্চিত ফ্যাট বার্ণ হবে, ওজন কমবে। সকালে ক্ষুদা লাগবে। ফলে আপনি সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে পারবেন। ভালো মতো নাস্তা করে কাজে যেতে পারবেন।
৪। এই অভ্যাস করলে আমাদের দেহের পরিপাকতন্ত্রের বিশ্রাম হয় । কারণ, সারাদিন খাবার হজম করতে পরিপাকতন্ত্রের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। রাতে তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়া শেষ করলে পরিপাকতন্ত্রকে বিশ্রাম করার সুযোগ দেয়া যায়।
৫। ঘুমানোর আগেই রাতের খাবার খেলে রাতে পরিপাকতন্ত্র যেহেতু বিশ্রামের সুযোগ পায়, তাই তখন ঘুমও ভাল হবে।
৬। গবেষণায় দেখা যায় যারা রাতে দেরি করে খাবার খায় তাদের ৫৫% এর মাঝে হৃদরোগ হবার ঝুকি থাকে। তাই রাতের খাবার তিন ঘন্টা আগে খেলে হৃদরোগের সম্ভবনা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
৭। একটানা অনেক দিন যদি বেশি রাতে না খাওয়া হয়, তা হলে হৃদরোগী এবং স্থুলতার সমস্যা যাদের আছে তাদের জন্য বেশ উপকারি । কারণ এই অভ্যাস ক্ষুদার হরমোণকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। ফলে ক্ষুদা কম লাগে। কারণ, দেখা গেছে এই হরমোন অধিকাংশ সময় স্থুল মানুষদের মধ্যে অকার্যকর থাকে।
৮। রাতের খাবার ঠিক সময়ে খেলে তা দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন বের করে দিতে পারে। রোজা রাখলে শরীর যেভাবে টক্সিন বের করতে সেভাবে।
৯। রাতে তাড়াতাড়ি খেলে সঠিক সময়ে কম ক্ষুদা নিয়ে খাওয়া হতে পারে, ফলে কম খাওয়া হলে, এটি ইন্সুলিনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
রাতের খাবার দেরি করে খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে-
খাবার ঠিক মতো হজম হবে না, পুরোটাই ফ্যাট হিসেবে সঞ্চিত হযে ওজন বাড়াবে।
হজমের সমস্যা, যেমন: বুক জ¦ালা পোড়া, গ্যাস, ঢেকুর, হজমের সমস্যা, মাথা ব্যাথা, ফুসফুসে প্রদাহ ইত্যাদি হতে পারে।
অনেক দিন ধরে এরকম অনিয়ম হলে খাদ্যনালির ক্যান্সারও হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। করাণ, অ্যাসিডিটির সমস্যার জন্য রোগীরা সাধারণত যেসব ওষুধ সেবন করেন, সেগুলি বেশি দিন ব্যাবহার করলে ক্যান্সার হতে পারে।
ওজন বেশি হলে হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিসের সমস্যা ও নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।